গত বছরের ৫ আগস্টের আগে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র ছিল সাদা পাথরের অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। কিন্তু এরপর থেকে প্রায় বিরামহীনভাবে পাথর ও বালু লুট চলছে, অনুমানিক ১ কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট পাথর চুরি হয়েছে, যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকার বেশি। বিজিবির চারটি ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও লুট অব্যাহত।
প্রশাসন দাবি করছে তারা মোবাইল কোর্ট ও টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অভিযান চালাচ্ছে, তবে স্থানীয়রা ও পরিবেশবিদরা মনে করেন প্রশাসনের শিথিলতা ও প্রভাবশালীদের অবৈধ কার্যক্রমই এর মূল কারণ। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও পাথর তোলা বন্ধ হয়নি।
সাদা পাথরের উৎপত্তি ও গুরুত্ব:
ধলাই নদী ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ি ঝর্ণা থেকে নেমে আসে এবং তীব্র স্রোতে পাথর এনে জমায়।
পাথর প্রাকৃতিকভাবে পানির স্রোত নিয়ন্ত্রণ করে, অক্সিজেন মিশিয়ে পানির গুণমান উন্নত করে এবং আশপাশের অঞ্চলে খাবার পানির চাহিদা মেটায়।
পাথর অপসারণে স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি, প্লাবন, নদীভাঙন ও পানিদূষণ হয়।
বর্তমান পরিস্থিতি:
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন প্রশাসনের স্থবিরতা ও ভয়ভীতিই লুটের কারণ।
কিছু এলাকায় বিজিবি ক্যাম্পের কাছেই অল্প পাথর অবশিষ্ট আছে।
সম্প্রতি প্রশাসনের অভিযান হলেও লুট পুরোপুরি থামেনি।
এটি শুধু একটি পর্যটনকেন্দ্রের ধ্বংস নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক জল ও পরিবেশ ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতি।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ পর্যটন কেন্দ্র থেকে লুট হওয়া প্রায় ৪০ হাজার ঘনফুট সাদা পাথর ঢাকার ডেমরার সারুলিয়া থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১১, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার রাতে পরিচালিত অভিযানে সাতটি প্রতিষ্ঠান থেকে আস্ত ও ক্রাশড পাথর জব্দ করা হয়। ভোলাগঞ্জ থেকে মোট প্রায় ২ লাখ ঘনফুট পাথর (মূল্য ২০০-২৫০ কোটি টাকা) ও ৬ লাখ ঘনফুট বালু (মূল্য ২৪০ কোটি টাকা) লুটের অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের তালিকা করা হয়েছে এবং পরবর্তী অগ্রগতি শিগগির জানানো হবে।
সিলেট সাদাপাথর লুটপাট ঘটনা – পূর্ণ সারসংক্ষেপহাইকোর্ট সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র থেকে লুট হওয়া সব পাথর সাত দিনের মধ্যে আগের স্থানে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িতদের তালিকা চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর কে এম নুরুন্নবীর দায়ের করা রিটের প্রেক্ষিতে এই আদেশ হয়। এ বিষয়ে আগামী রোববার শুনানি হবে। স্বরাষ্ট্রসচিব, পরিবেশসচিব, আইজিপি, সিলেটের ডিসি, কোম্পানীগঞ্জের ইউএনওসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। রিটে ঘটনার তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।প্রশাসনের পাঁচ সিদ্ধান্ত (বুধবার রাতের সমন্বয় সভা):জাফলং ইসিএ ও সাদাপাথরে ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনীর টহল।গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে স্থায়ী চেকপোস্টে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী।অবৈধ ক্রাশিং মেশিনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও বন্ধের অভিযান।পাথর চুরির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও মামলা।চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে আগের স্থানে ফিরিয়ে দেওয়া।অভিযান ও উদ্ধার:বুধবার রাত থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭৫ হাজার ঘনফুট পাথর (প্রায় ১৩০ ট্রাক) উদ্ধার।বুধবার রাতে ১২ হাজার ঘনফুট উদ্ধার হয়েছিল।উদ্ধারকৃত পাথর পুনঃস্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।জাফলংয়ে উদ্ধার:গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার।ইউএনও রতন কুমার অধিকারীর নেতৃত্বে পাথর ফের জিরো পয়েন্টে ফেলা হয়।ডিসির পরিদর্শন ও বক্তব্য:বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের ডিসি মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করেন।তিনি বলেন, পরিবেশ এখনো পর্যটনবান্ধব, তবে ভবিষ্যতে যেন আর ক্ষতি না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।গ্রেপ্তার:বৃহস্পতিবার রাতের শেষে কোম্পানীগঞ্জের পূর্ব ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর আলম গ্রেপ্তার।তিনি আগের অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন ও জব্দ যন্ত্রপাতি চুরির মামলার আসামি।সাম্প্রতিক লুটপাটে তার সম্পৃক্ততা তদন্ত হচ্ছে।সিলেটের বাইরে উদ্ধার:নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে বৃহস্পতিবার র্যাব-১১ ভোলাগঞ্জের লুট হওয়া ৩০-৪০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করেছে।
সিলেটের ভোলাগঞ্জের বিখ্যাত সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র এখন পাথরশূন্য বিরানভূমি। গেল বছরের ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার সুযোগে শত কোটি টাকার পাথর লুট হয়। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় বিএনপি নেতাসহ রাজনৈতিক মদতে এই লুট হয়েছে। পরিবেশবাদীদের প্রতিবাদে কিছুদিন অভিযান হলেও লুট বন্ধ হয়নি। সম্প্রতি পাথর পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর প্রশাসন সভা ডাকলেও জেলা প্রশাসক প্রশাসনের কোনো গাফিলতি মানেননি। পরিবেশবাদীরা দাবি করছেন, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের আশকারাতেই লুটপাট চলেছে।আপনি চাইলে আমি এই সারাংশটিকে CoreNewsBD স্টাইলে ছোট শিরোনাম ও বুলেটপয়েন্টে সাজিয়ে দিতে পারি যাতে পোস্টের মতো দেখায়।